দৃশ্যকল্প-১: 'ক' দেশটি শিল্পোন্নত। দেশটির একটি ব্যবসায়ী দল উৎপাদিত শিল্পপণ্যের বিক্রি এবং উপকরণ সংগ্রহ করতে 'খ' দেশে যায়। এক পর্যায়ে 'খ' দেশের সরকারের লোকজনের সহায়তায় শাসন ক্ষমতা দখল করে।
দৃশ্যকল্প-২: 'খ' রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যবসায়ী দল অর্থ আদায়ের দায়িত্ব নেয় আর দখল সহযোগীদের দেয় শাসন পরিচালনার সুযোগ। এতে কষ্টে পড়ে যায় সাধারণ জনগণ।
দৃশ্যকল্প-২-এ বর্ণিত বিষয়টি হলো দ্বৈতশাসন ব্যবস্থা, যা বাংলার মানুষের জন্য ছিল চরম অভিশাপম্বরূপ।
নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের মধ্য দিয়ে বাংলার মূল ক্ষমতা চলে যায় ধূর্ত ও দুর্ধর্ষ ইংরেজ সেনাপতি রবার্ট ক্লাইভের হাতে। তিনি দিল্লির সম্রাট শাহ আলমের নিকট হতে দেওয়ানি লাভের পর বাংলার নবাবকে পুতুল নবাবে পরিণত করে এবং দ্বৈতশাসন প্রবর্তন করেন। দ্বৈতশাসন ছিল একটি অদ্ভুত শাসনব্যবস্থা। এই শাসনব্যবস্থায় ক্লাইভ বাংলার নবাবের ওপর শাসন ও বিচার বিভাগের দায়িত্ব অর্পণ করেন এবং রাজস্ব আদায় ও প্রতিরক্ষার দায়িত্ব ন্যস্ত করেন কোম্পানির ওপর। এর ফলে নবাব পেলেন ক্ষমতাহীন দায়িত্ব আর কোম্পানি লাভ করল দায়িত্বহীন ক্ষমতা। এ ব্যবস্থা এদেশের মানুষের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব পেয়ে ইংরেজরা প্রজাদের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ করে তা আদায়ে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করে। অতিরিক্ত করের চাপে যখন জনগণ ও কৃষকের নাভিশ্বাস উঠার অবস্থা, সে সময় দেশে পরপর তিন বছর অনাবৃষ্টির ফলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ১৭৭০ সালে বাংলায় নেমে আসে দুর্ভিক্ষের করাল ছায়া। দুর্ভিক্ষে লক্ষ লক্ষ লোক অনাহারে মারা গেলেও কোম্পানি করের বোঝা কমানোর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এই দুর্ভিক্ষে বাংলার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ লোকের মৃত্যু হয়েছিল, যা ছিল দ্বৈতশাসনের প্রত্যক্ষ ফল।
তাই বলা হয়, দ্বৈতশাসন ছিল বাংলার মানুষের জন্য এক চরম অভিশাপ।"
আপনি আমাকে যেকোনো প্রশ্ন করতে পারেন, যেমনঃ
Are you sure to start over?